
এম. রাশিদুল হাসান
বিএসসি (অনার্স), এমএসসি (১ম শ্রেণিতে ২য়),
এম.এড., শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রাক্তন প্রভাষক, রসায়ন বিভাগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
প্রধান শিক্ষক ও সদস্য সচিব,
চাষীরহাট নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়।
প্রধান শিক্ষকের বাণী
সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম। শিক্ষা কোনো পণ্য নয়, এটি প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার । প্রতিটি শিশুর মধ্যে সুপ্ত কোনো না কোনো প্রতিভা রয়েছে। একটি সফল শিক্ষালয়ের কাজ হচ্ছে সে প্রতিভা অন্বেষণ করে তা বিকশিত হবার সুযোগ করে দেয়া। দ্রুত ঊর্ধ্বগামী ও অগ্রসরমান গতির সাথে তাল মিলিয়ে আগামী বিশ্বের একজন সফল নাগরিক হতে চাইলে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, নীতি-নৈতিকতা ও আধুনিকতার সমন্বয়ে গঠিত এমন একটি শিক্ষা-ব্যবস্থা প্রয়োজন যা বাস্তব সকল সমস্যার বাস্তব সমাধান করতে সক্ষম। আমাদের দেশের সিংহভাগ মানুষ এখনও গ্রামে বসবাস করলেও আয়-রোজগারের জন্য তারা যখন শহরমুখী হয় তখন তাদের সন্তানেরা যথাযথ শিক্ষালাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত থেকে যায়। প্রত্যন্ত ও প্রান্তিক অঞ্চলের এ সমস্ত সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য শহরমুখিতার চিন্তাকে বাদ দিয়ে আগামী বিশ্বের শহুরে সভ্যতার সাথে সমান গতিতে এগিয়ে চলার জন্য দেশের স্বনাম ও সুনামধন্য একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী উদ্যমী ও মেধাবী শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে চাষীরহাট নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়। আমাদের সাথে থাকবেন।
সন্তান আপনার, গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের।
সকলকে ধন্যবাদ।
বিদ্যালয় সম্পর্কে বিস্তারিত
স্কুল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের সমুদ্র উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার চাষীরহাট ইউনিয়নটি ছিল একটি পশ্চাৎপদ, সুযোগ-সুবিধাবঞ্চিত ইউনিয়ন। কিন্তু একজন মানুষের ছোঁয়ায় সেই ইউনিয়নটি এখন উন্নয়নের পথে বেগবান। এই উন্নয়নের রূপকার এ এলাকার কৃতিসন্তান হেবযুত তওহীদের মাননীয় এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তিনি অনেক বাধা, প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জের মুখেও এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। তাঁর উদ্যোগে এই ইউনিয়নে শিক্ষা, চিকিৎসা, শিল্প, বাণিজ্য, কৃষিসহ প্রায় ৫০টির বেশি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এলাকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার আলো জ্বালানোর জন্য বিজ্ঞান-প্রযুক্তি এবং ধর্মীয়-নৈতিক শিক্ষার সমন্বয়ে একটি সমন্বিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয় যার নাম- চাষীরহাট নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়।
বর্তমান বিশ্ব অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং এবং প্রতিযোগিতামূলক। আজ একদিকে যেমন প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হচ্ছে অন্যদিকে জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে জ্যামিতিক হারে। বাড়তি এই জনসংখ্যার বহুমুখী চাহিদা পূরণ করতে হলে উৎপাদন খাতে নানা প্রযুক্তির ব্যবহার, নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করার প্রয়োজন পড়ছে। ফলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নৈতিকভাবে সৎ ও ন্যায়পরায়ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতেও প্রয়োজন এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা যা একই সাথে তাদের আত্মিক উন্নয়ন ঘটাবে ও দেশপ্রেমিক করবে। এই দুইয়ের সমন্বয়ে এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করা প্রয়োজন যা একদিকে তাদের নৈতিক চরিত্রে বলিয়ান করবে, মানবতাবোধ জাগ্রত করবে, সমস্ত রকম ভেদাভেদ, বৈষম্য দূর করে সাম্য ও ঐক্যের চেতনা সৃষ্টি করবে। অপরদিকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকার জন্য, জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায়ও তারা শিক্ষিত হবে। এ দুই দিকের সমন্বয়ে ভারসাম্যপূর্ণ একটি শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়েই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে চাষীরহাট নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়াটাই জীবনের সার্থকতা নয়, বড় বিষয় হচ্ছে সেই ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ারের মধ্যে মায়া-মমতা, ন্যায়পরায়ণতা, নৈতিকতা, সততা ইত্যাদি মানবিক গুণাবলি রয়েছে কিনা। একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষার গুণে মানুষ হিসাবে বড় হয়ে উঠল, নাকি কেবল পুঁথিগত ও বস্তুগত বিদ্যা অর্জন করে স্বার্থপর যন্ত্রমানবে পরিণত হল কিনা সেটাই আসল কথা।
